মঙ্গলবার, ২৪ মার্চ, ২০২০

আজ মধ্যরাত থেকে সারা দেশে ২১ দিনের লকডাউন, ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর

আজ মধ্যরাত থেকে সারা দেশে ২১ দিনের লকডাউন, ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর


প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
দেশ জুড়ে নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়েছে। তার জেরে এ বার সারা দেশে আগামী তিন সপ্তাহের জন্য লকডাউন ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত এই লকডাউন জারি থাকবে। ওই সময়ে দেশের কোনও নাগরিকের বাড়ির বাইরে পা রাখা উচিত নয় বলে জানিয়ে দিলেন তিনি।

২১ দিন দীর্ঘ সময়, কিন্তু এই লকডাউন না ংমানলে দেশ ২১ বছরের জন্য পিছিয়ে যাবে বলেও এ দিন মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নয়, আপনাদের পরিবারের এক জন সদস্য হিসাবে এমন অনুরোধ করছি। এই ক’টা দিন বাইরের জীবন ভুলে যান।’’

করোনার প্রভাবে ইতিমধ্যেই দেশের একাধিক রাজ্যে লকডাউন ঘওষমা করা হয়েছে। কার্ফুও জারি হয়েছে কোথাও কোথাও। এমন পরিস্থিতিতে এ দিন দুপুরেই বেশ কিছু পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সময়সীমা বাড়ানোর পাশাপাশি, কোনও রকম চার্জ ছাড়া যে কোনও ব্যাঙ্কের এটিএম থেকে টাকা তোলায় ছাড় দেওয়া হয়। করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে এ দিন ১৫ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজের ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। এই টাকায় আইসোলেশন ওয়ার্ড, আইসিইউ, ভেন্টিলেটরের সংখ্যা বাড়ানো হবে বলে জানান তিনি।


এ দিন প্রধানমন্ত্রী বলেন— 
• ২১ দিনের লকডাউন দীর্ঘ সময়, কিন্তু আপনাদের জীবন আমাদের কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমার বিশ্বাস প্রত্যেক ভারতবাসী সরকারের নির্দেশ মেনে চলবেন। আশাকরি খুব শীঘ্র এই সঙ্কট কাটিয়ে বেরিয়ে আসতে পারব আমরা। 
• আপনাদের কাছে অনুরোধ, এই সঙ্কটের সময় ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনও ওষুধ খাবেন না। আমার বিশ্বাস প্রত্যেক ভারতীয়, সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশ মেনে চলবেন।
• এই সঙ্কটের সময় নানারকম গুজবও ছড়াচ্ছে। এই ধরনের গুজব এবং কুসংস্কার এড়িয়ে চলুন। শুধুমাত্র কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের নির্দেশ মেনে চলুন।
• এই সঙ্কটের সময়ে সব রাজ্যগুলিকে স্বাস্থ্য পরিষেবাকেই প্রাধান্য দিতে হবে।
• দেশের স্বাস্থ্য পরিষেবাকে মজবুত করতে আজ ১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে সরকার। এতে আইসোলেশশন বেড, আইসিইউ, ভেন্টিলেটরের সংখ্যা বাড়ানো যাবে। এরই সঙ্গে মেডিক্যাল এবং প্যারামেডিক্যাল প্রশিক্ষণের কাজও গতি পাবে।
• দরিদ্র মানুষের সেবায় এই সঙ্কটের সময়ও অনেকে এগিয়ে আসছেন। 
• করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলি নিরন্তর কাজ করে চলেছে। আপনারা যাতে সব জরুরি পরিষেবা পান, তা সুনিশ্চিত করতে একজোট হয়ে কাজ করছেন সকলে। 
• আপনাদের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দিচ্ছেন সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা। পরিবার-পরিজনদের ফেলে রাস্তায় নেমে কাজ করছে পুলিশ। আপনাদের রাগ-অভিমান সহ্য করছেন। তাঁদের কথা ভাবুন।
• যাঁরা সাফাইয়ের কাজে যুক্ত, তাঁদের জন্য প্রার্থনা করুন।
• আপনাদের কাছে হাতজোড় করে প্রার্থনা করছি, জীবন বাজি রেখে যাঁরা কাজ করে চলেছেন, সেই ডাক্তার, নার্স, প্যারামেডিক্যাল কর্মী, হাসপাতাল কর্মী, অ্যাম্বুলেন্স চালকদের জন্য প্রার্থনা করুন।
• যত দিন দেশ লকডাউন থাকবে তত দিন এই সঙ্কল্প নিয়ে চলতে হবে। 
• ভারত এখন এমন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে রয়েছে যেখানে আমাদের সকলকে সংযম বজায় রাখার সঙ্কল্প নিতে হবে। প্রাণ থাকলে তবেই দেশ থাকবে।
• করোনা থেকে বাঁচার একটাই উপায়, লক্ষ্মণরেখা পার করবেন না।
• চিন, রাশিয়া, ফ্রান্স, ইটালি- সহ এই দেশগুলির স্বাস্থ্য পরিষেবা অত্যন্ত উন্নত। তা সত্ত্বেও করোনার মোকাবিলা করতে পারেনি তারা। এই পরিস্থিতিতে উপায় কি? একটাই উপায়, যাঁরা করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে পেরেছেন তাঁদের থেকে শিক্ষা নেওয়া। ওই সব দেশে সরকারের কথা শুনে বাড়ির বাইরে বেরোননি সাধারণ মানুষ। আমাদেরও তা মেনে চলতে হবে।
• সারা বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লক্ষে পৌঁছতে ৬৬ দিন লেগেছিল। তার পর ১১ দিনে সংখ্যাটা বেড়ে ২ লক্ষ দাঁড়ায়। 
• করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিকে শুরুতে দেখলে বোঝাই যায় না। তাই বাড়িতে থাকুন। কেউ রাস্তায় বেরোবেন না।
• আপনাদের বাড়ির দরজার বাইরে লক্ষ্ণণরেখা টানা হল। মনে রাখবেন, তার বাইরে পা রাখলেই করোনার মতো মহামারিকে বাড়িতে ডেকে আনবেন।
• এই ক’দিন বাইরের জীবন ভুলে যান। 
• প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নয়, আপনাদের পরিবারের এক জন সদস্য হিসাবে এমনটা ঘোষণা করছি। 
• এটা না করলে দেশ আরও ২১ বছর পিছনে চলে যাবে।
• আগামী তিন সপ্তাহ এই লকডাউন জারি থাকবে।
• আপনাদের কাছে অনুরোধ, এই সময় যে যেখানে রয়েছেন, সেখানেই থাকুন।
• প্রত্যেক ভারতীয়, প্রত্যেক পরিবারকে বাঁচানোই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। 
• দেশের যা পরিস্থিতি, তাতে এই পদক্ষেপ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
• দেশের প্রতিটি রাজ্য, জেলায় এই নির্দেশ কার্যকর হবে। 
• আজ রাত ১২টা থেকে গোটা দেশে সম্পূর্ণ ভাবে লকডাউন জারি হতে চলেছে। 
• গত দু’দিনে দেশের অনেক রাজ্য লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারগুলির এই সিদ্ধান্তকে গুরুত্ব দিতে হবে।
• এমন দায়িত্বহীনতা চলতে থাকলে, ভারতকে এর চরম মূল্য চোকাতে হবে। কী ক্ষতি হবে তা অনুমানও করতে পারবেন না।
• কিছু মানুষের ভুল সিদ্ধান্তের ফলে‌ বহু মানুষের জীবনে বিপদ ডেকে আনতে পারে।
• কিছু মানুষ ভাবছেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা শুধুমাত্র আক্রান্তদের জন্যই প্রয়োজন। এই ধারণা ভুল। প্রত্যেক পরিবারের জন্য এই দূরত্ব প্রয়োজন। 
• করোনার থেকে বাঁচার আর কোনও উপায় নেই।
• বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বৈশ্বিক মহামারি থেকে রক্ষা পাওয়ার একটাই উপায়, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। 
• করোনাভাইরাস এত দ্রুত হারে বাড়ছে, যে সবরকম ব্যবস্থা সত্ত্বেও পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না বিশ্বের তাবড় দেশ।
• এর জন্য সকলের প্রশংসা প্রাপ্য।
• ভারতবাসী দেখিয়েছেন যখন দেশ এবং মানবতার উপর সঙ্কট আসে, তখন কী ভাবে একজোট হয়ে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা যায়। 
• ২২ মার্চ জনতা কার্ফুতে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে সারা দিয়েছেন ভারতবাসী।

বুধবার, ১৮ মার্চ, ২০২০

Coronavirus: ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১৪৮ ! নয়ডায় আক্রান্ত আরও একজন এর মধ্যে ১২৩ জন ভারতীয় ২৫ জন বিদেশি।

Coronavirus: ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১৪৮ ! নয়ডায় আক্রান্ত আরও একজন এর মধ্যে ১২৩ জন ভারতীয় ২৫ জন বিদেশি।


                       Fig:  Corona Virus

বিশ্বজুড়ে করোনা-কাঁপুনি। গোটা বিশ্বজুড়ে বেড়েই চলেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৷ আর তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গোটা বিশ্বে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৭ হাজারের বেশি ১৫৯ দেশে ২ লক্ষ ছুঁতে চলেছে করোনা আক্রান্ত। গোটা বিশ্বে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ১ লক্ষ ৮২ হাজার জন মানুষ ৷ চিনের সংখ্যাটা হল ৮২ হাজার ৭ জন আর অন্যদিকে ইতালিতে মৃত্যুর সংখ্যা ২ হাজার ৫০৩ এবং আক্রান্তের সংখ্যা ৩১ হাজার ৫০০ মতো ৷
আতঙ্ক রোজ বেড়েই চলেছে করোনা নিয়ে ৷ গোটা বিশ্বই প্রায় স্তব্দ হয়ে পড়েছে ৷ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে ৷ অন্যদিকে ভারতে এই মুহূর্তে আক্রান্তের সংখ্যা ১৪৮ জন ৷ এর মধ্যে ১২৩ জন ভারতীয় ২৫ জন বিদেশি। গতকাল মুম্বইয়ের কস্তুরবা হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে এই ব্যক্তির ৷ এর ফলে মৃতের সংখ্যা এখন ৩। ইতিমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিলেছেন ১৪ জন। মঙ্গলবার প্রথম করোনা ভাইরাস আক্রন্তের খোঁজ পাওয়া যায় কলকাতায়

                         Fig: Corona Virus 
দেশের প্রায় সব রাজ্যেই বন্ধ করা হয়েছে স্কুল, কলেজ, সিনেমাহল, শপিং মল ৷ সামাজিক কোনও অনুষ্ঠান বা জমায়েতে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে ৷ বহু রাজ্যেই বাতিল করা হয়েছে সামাজিক অনুষ্ঠান ৷ দেশের মধ্যে ও দেশের বাইরে ট্র্যাভেলের ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে ৷ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের পরিস্থিতি যাতে চিন বা ইতালির মতো না হয় তার জন্য আগামী ৩০ দিন খুব গুরুত্বপূর্ণ ৷ চতুর্থ বা পঞ্চম সপ্তাহেই ভয়াবহ ভাবে এই ভাইরাস সংক্রমণের নজির রয়েছে। ভারতে যাতে তা না হয় সেই লক্ষ্যেই দেশজুড়ে চরম সতর্কতা। ভারত এখন করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ধাপে ৷ অর্থাৎ চিন, ইতালি, ইরানের মতো আক্রান্ত দেশ থেকে যাঁরা সংক্রমিত হয়ে ফিরেছেন তাঁদের থেকে এ দেশে সংক্রমণ ছড়িয়েছে ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা একশো ছাড়ালেও পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি বলেই দাবি ৷ কিন্তু সংক্রমণের হার যাতে এখানেই আটকানো যায় তার জন্য ব্যাপক সতর্কতা জরুরি ৷ বিশেষজ্ঞরা যাকে বলেন ‘ফ্ল্যাটনিং দ্য কার্ভ’।

রবিবার, ১৫ মার্চ, ২০২০

করোনা: স্কুল-কলেজ বন্ধ, বোর্ড পরীক্ষা চালু

করোনা: স্কুল-কলেজ বন্ধ, বোর্ড পরীক্ষা চালু


করোনাভাইরাস সংক্রমণ রুখতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সোমবার থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত রাজ্যের সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। স্কুলের নিজস্ব পরীক্ষাও বন্ধ থাকবে। তবে বিভিন্ন বোর্ডের যে সব পরীক্ষা এখন চলছে, সেগুলি যথারীতি চলবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শনিবার বলেন, ‘‘এটা স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সতর্কতামূলক পদক্ষেপ। ৩০ মার্চ পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’

এই ঘোষণার পরে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ জানিয়েছে, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা চলবে। উচ্চ মাধ্যমিক ও একাদশ শ্রেণির পরীক্ষার ডিউটির সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, তাঁদের পরীক্ষা সংক্রান্ত সব কাজই করতে হবে। যে স্কুলে গার্ড পড়েছে সেখানে গার্ডও দিতে যেতে হবে। সিবিএসই-র দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণি, আইসিএসই, আইএসসি পরীক্ষাও চলবে বলে জানানো হয়েছে। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য জানান, মেডিক্যাল কলেজ, ডেন্টাল এবং নার্সিং ইনস্টিটিউট এই নির্দেশের আওতায় পড়ে না। স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রাজেন্দ্রনাথ পাণ্ডে জানিয়েছেন, এমডি, এমএস পরীক্ষা যথারীতি হবে।

এর আগে বর্ধিত গরমের ছুটির সময় ক্লাস বন্ধ থাকলেও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের স্কুলে যেতে হয়েছিল। এ বার তাঁরা কী করবেন?  শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘গরমের ছুটি আর করোনা সংক্রমণ তো এক নয়! যাঁদের উচ্চ মাধ্যমিক এবং একাদশ শ্রেণির পরীক্ষার গার্ড রয়েছে তাঁরা স্কুলে যাবেন। অন্যরা বাড়িতে থাকুন। মাধ্যমিকের খাতা দেখুন। কর্মী, আধিকারিকেরাও বাড়ি থেকে কাজ করুন। খুব প্রয়োজনে অফিসে আসবেন।’’




তবে মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা অনিমেষ হালদারের বক্তব্য, এই পরিস্থিতিতে সব রকম সতর্কতা অবলম্বন করে উচ্চ মাধ্যমিক ও একাদশ শ্রেণির বাৎসরিক পরীক্ষা আদৌ পরিচালনা করা সম্ভব কি না, সে ব্যাপারে স্বাস্থ্য দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে শিক্ষা সংসদের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। 

বর্তমান পরিস্থিতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণার প্রয়োজনীয়তা মেনে নিয়ে শিক্ষক সংগঠন আবুটার  সহ সভাপতি তরুণ নস্কর স্কুলে গরমের ছুটি কমানোর ও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনের সময় বাড়ানোর কথা বিবেচনা করার অনুরোধ জানিয়েছেন। 

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সব পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় পঠনপাঠন সংক্রান্ত সব কাজ বন্ধ রাখছে এবং অভ্যন্তরীণ পরীক্ষাও স্থগিত করে দিয়েছে। সভাসমিতিও বন্ধ রাখা হচ্ছে। পড়ুয়ারা চাইলে ছাত্রাবাস ছেড়ে যেতে পারবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান, প্রশাসনিক ও অতিজরুরি কাজ চলবে।  ৩১ মার্চ পর্যন্ত সমস্ত পঠনপাঠন, সেমিনার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়। বন্ধ থাকবে হস্টেলও। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরী জানান, আজ, রবিবার দূরশিক্ষার নির্ধারিত পরীক্ষা হবে। বাকি পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পরে পরিবর্তিত নির্ঘণ্ট জানানো হবে। তবে প্রশাসনিক বিভাগ খোলা থাকবে। বারাসত রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পার্ট থ্রি পরীক্ষা রয়েছে। তা পিছিয়ে দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। কলকাতার আমেরিকান সেন্টারের লাইব্রেরি এবং ‘ইউএসআইইএফ’ আপাতত বন্ধ থাকছে। 

নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন আবাসিক স্কুল ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। পড়ুয়াদের বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে বলা হয়েছে অভিভাবকদের। শিবপুর আইআইইএসটি ৩১ মার্চ পর্যন্ত সব ক্লাস বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রয়োজনে শিক্ষকদের অনলাইনে ক্লাস নিতে বলা হয়েছে। তবে ছাত্রাবাসগুলি খোলা থাকছে। পড়ুয়ারা চাইলে অভিভাবকের সম্মতি নিয়ে বাড়ি যেতে পারবেন। তবে এক বার গেলে ৩১ মার্চের আগে ফিরতে পারবেন না। পড়ুয়াদের ক্যাম্পাসের বাইরে কম যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। 

শনিবার, ১৪ মার্চ, ২০২০

এন-৯৫ নেই, চড়া দামে বিকোচ্ছে সাধারণ মাস্ক

এন-৯৫ নেই, চড়া দামে বিকোচ্ছে সাধারণ মাস্ক


করোনাভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কায় ইতিমধ্যে ২৮ জনকে নজরবন্দি করা হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরে।
এঁদের সকলেই বিদেশ ফেরত। কেউ চিন কিংবা জাপান, কেউ তাইল্যান্ড কিংবা ইরান থেকে ফিরেছেন। এই সংক্রমণকে ‘প্যানডেমিক’ বা অতিমারী হিসেবে ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। করোনা- পরিস্থিতির জেরে মাস্ককে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য হিসেবেও ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। এরপরেই মাস্কের আকাল দেখা দিয়েছে জেলায়। বেশিরভাগ এলাকাতেই এন- ৯৫ মাস্ক নেই।
জেলায় মাস্কের ব্যবহার নতুন নয়। গাড়ির ধোঁয়া, পথের ধুলো প্রভৃতি দূষণ ঠেকাতে এমনিতেই কেউ কেউ মাস্ক ব্যবহার করেন।  জ্বর, সর্দি, হাঁচি, কাশি সহ নানা সংক্রমণ থেকে বাঁচতেও অনেকে মাস্ক পরেন। তাই অনেক ওষুধের দোকানে, সার্জিক্যাল সরঞ্জামের দোকানে কমবেশি মাস্ক থাকেই। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে মাস্কের জোগান প্রায় নেই। 
মেদিনীপুরের এক সার্জিক্যাল সরঞ্জাম বিক্রির দোকানের মালিক সোমনাথ সিংহ মানছেন, ‘‘আমাদের কাছে এন- ৯৫ মাস্ক একটাও নেই। বরাত দিয়েও মাস্ক পাচ্ছি না। ক্রেতারা রোজই ফিরে যাচ্ছেন।’’ জেলার এক-এক এলাকায় মাস্কের একের রকম দাম কেন? বিক্রেতাদের দাবি, জোগান স্বাভাবিক না থাকার ফলেই দামের হেরফের হচ্ছে।
এন-৯৫ মাস্ক করোনাভাইরাস- সহ বিভিন্ন ফ্লুয়ের ভাইরাসকে ঠেকাতে সক্ষম। এক সময়ে ব্লাড ফ্লুয়ের সংক্রমণ ঠেকাতেও অনেকে এই মাস্ক ব্যবহার করেছেন। শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়ার জন্য সব মাস্কেই ছিদ্র থাকে। তবে এন- ৯৫ মাস্ক দিয়ে ২.৫ মাইক্রন সাইজের ধূলিকণা কিংবা ভাইরাস সহজে ঢুকতে পারে না। তাই এই মাস্কের চাহিদাই বেশি। 
শহরের এক ওষুধের দোকানের মালিকের মন্তব্য, ‘‘আমরা কলকাতা থেকে মাস্ক আনি। শুনেছি এখন কলকাতাতেই না কি খোলাবাজারে এন- ৯৫ মাস্ক ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’’ 
মাস্কের কালোবাজারি হচ্ছে কেন? তাঁর দাবি, ‘‘এখানে মজুতই নেই। ফলে, কালোবাজারির প্রশ্ন আসে না!’’